এক প্রশান্তির ঠিকানা নোবিপ্রবির শান্তিনিকেতন
নোবিপ্রবি প্রতিনিধি: নোয়াখালী জেলার ১০১ একরজুড়ে বিস্তৃত সবুজ ক্যাম্পাস— নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি)। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচঞ্চল পরিবেশের মাঝেই রয়েছে এক নীরব প্রশান্তির আশ্রয়, যার নাম শান্তিনিকেতন।বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে শান্তিনিকেতন শুধু একটি জায়গা নয়, এটি এক আবেগময় মিলনক্ষেত্র, যেখানে ক্লান্ত মনে মেলে প্রশান্তির পরশ। পশ্চিমে রয়েছে অতিথি পাখিদের স্বর্গভূমি ময়নাদ্বীপ এবং পূর্বে সবুজ প্রান্তরে প্রসারিত কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ। এই দুইয়ের মাঝেই শান্তিনিকেতন যেন এক প্রাণময় স্বর্গভূমি, যেখানে শিক্ষার্থীরা চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে খুঁজে নেয় নির্ভারতা।শান্তিনিকেতনে সারাদিনই থাকে শিক্ষার্থীদের পদচারণা। ক্লাস ও পরীক্ষার ব্যস্ততার ফাঁকে তারা আড্ডা দেয়, গল্প করে, কবিতা আবৃত্তি ও গান গেয়ে সময় কাটায়। কখনো আয়োজন করে চড়ুইভাতি, কখনো ছোটখাটো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।বাংলা বিভাগের ২০২৩–২৪ সেশনের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম চড়ুইভাতির জন্য শান্তিনিকেতনকেই বেছে নিয়েছিল। তাদের মতে, এই জায়গায় প্রশান্তি, স্থিরতা ও নীরবতার এক অনন্য মেলবন্ধন অনুভব করা যায়।বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মারুফ বলেন, ‘প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য শান্তিনিকেতন এক অনন্য জায়গা। গাছের ছায়ায় বসলে মনটা চনমনে হয়ে যায়, ব্যথিত মন সবুজের মাঝে নতুন প্রাণ পায়। এখানে প্রকৃতির কোলে বসে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেই, গান গাই, গল্প করি।’শান্তিনিকেতনের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে কৃষি বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘শান্তিনিকেতন নোবিপ্রবির প্রাণকেন্দ্র, এক প্রসারিত প্রাণের মেলা। এখানে সারি সারি টঙের দোকান, শিক্ষার্থীদের আড্ডা, হাসি, কবিতা— সব মিলিয়ে পুরো জায়গাটি সর্বদা উচ্ছল ও প্রাণবন্ত।’বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিলা আক্তার প্রমী বলেন, ‘আমার কাছে শান্তিনিকেতন মানেই প্রশান্তির প্রতীক। ক্লান্ত সময়ে এখানে বসলে মনটা অনেক হালকা লাগে।’নোবিপ্রবির ক্যাম্পাসে এমন অনেক জায়গা আছে যেখানে মানুষ শূন্য দেখা যায়, কিন্তু শান্তিনিকেতন সবসময়ই সরব ও প্রাণচঞ্চল। শিক্ষার্থীরা জানান, এখানে বসলে মন থেকে অস্থিরতা মিলিয়ে যায়, ক্লান্তি ঢাকা পড়ে নীরব শান্তির আবরণে।সবুজের পরশ, পাখির কলতান আর বাতাসের মিষ্টি ফিসফিসে শান্তিনিকেতন যেন নোবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের হৃদয়ের সবচেয়ে প্রশান্ত কোণ। এখানেই লেখা হয় তারুণ্যের গল্প, বন্ধুত্বের কাব্য আর প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যাওয়ার এক চিরন্তন ভালোবাসার গান।