• ঢাকা
  • |
  • রবিবার ১৪ই পৌষ ১৪৩২ বিকাল ০৪:৪৩:৫৯ (28-Dec-2025)
  • - ৩৩° সে:
সংবাদ ছবি

ক্যানসারের যেসব আগাম সংকেত জানলে জীবন বাঁচানো সম্ভব

লাইফস্টাইল ডেস্ক : অনেক সময় হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া, ক্লান্তি অবসান না হওয়া কিংবা শরীরে গাঁট বা ফোলার মতো লক্ষণগুলোকে আমরা তেমন গুরুত্ব দিই না। ব্যস্ত জীবনের চাপে এসবকে অনেকেই ‘সাধারণ অসুস্থতা’ ভেবে এড়িয়ে যাই। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, এসব ‘সাধারণ’ মনে হওয়া লক্ষণ ক্যানসারের মতো মারাত্মক রোগের প্রথম সতর্ক সংকেত হতে পারে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ ক্যানসার প্রতিরোধযোগ্য। আরও গুরুত্বপূর্ণ, রোগটি যদি প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়ে, তবে অনেক ক্ষেত্রেই পুরোপুরি নিরাময় সম্ভব। তাই শরীরের অস্বাভাবিক কোনো পরিবর্তন দেখা দিলে তা অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।ভারতের অ্যাপোলো হাসপাতালের কনসালটেন্ট সার্জন অনকোলজিস্ট ডা. অজেশ রাজ সাক্সেনা বলেছেন, ক্যানসারের সফল চিকিৎসার জন্য দ্রুত ও প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে বহু জীবন রক্ষা সম্ভব।ক্যানসারের ৮টি প্রাথমিক সতর্ক সংকেত১. অকারণে ওজন কমে যাওয়া: খাবার বা জীবনযাত্রায় বড় পরিবর্তন না হলে ৬ থেকে ১২ মাসে ৫ শতাংশ বা তার বেশি ওজন কমা অন্ত্র, অগ্ন্যাশয় বা ফুসফুসের ক্যানসারের সংকেত হতে পারে।২. বিশ্রামেও কাটছে না ক্লান্তি: ঘুম বা বিশ্রামের পরও ক্লান্তি দূর না হলে লিউকেমিয়া, কোলন বা পাকস্থলীর ক্যানসার হতে পারে।৩. শরীরের কোথাও গাঁট বা ফোলা: গাঁট বা ফোলাভাব যা দীর্ঘদিন ধরে থাকে বা বড় হয়, তা কখনোই উপেক্ষা করা উচিত নয়।৪. ত্বক বা তিলের অস্বাভাবিক পরিবর্তন: তিলের রঙ, আকার বা সীমারেখায় পরিবর্তন ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।৫. দীর্ঘদিন ভালো না হওয়া ঘা: মুখ, ত্বক বা যৌনাঙ্গে শুকানো না এমন ঘা মুখগহ্বর বা ত্বকের ক্যানসারের ইঙ্গিত দেয়।৬. মল-মূত্রের অভ্যাসে পরিবর্তন: দীর্ঘ সময় ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, মলে রক্ত বা প্রস্রাবে রক্ত দেখা ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।৭. অস্বাভাবিক রক্তপাত বা নিঃসরণ: মাসিকের বাইরে রক্তপাত, কাশির সঙ্গে রক্ত, অথবা স্তনবৃন্ত থেকে অস্বাভাবিক তরল নিঃসরণ সতর্ক সংকেত।৮. তিন সপ্তাহের বেশি স্থায়ী কাশি বা কণ্ঠ ভাঙা: বিশেষ করে ধূমপায়ী হলে ফুসফুস বা গলার ক্যানসারের প্রাথমিক উপসর্গ হতে পারে।চিকিৎসকরা বলছেন, যদি কোনো উপসর্গ ২ থেকে ৩ সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয় বা ধীরে ধীরে গুরুতর হয়, তবে তা ‘সাধারণ সমস্যা’ ভেবে নয়, তাত্ক্ষণিক চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।ক্যানসার নিরাময়ের নতুন আশা ক্যানসার মানেই মৃত্যু নয়। সময়মতো শনাক্ত ও চিকিৎসার মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য ও অনেক ক্ষেত্রে পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য।আধুনিক চিকিৎসা ও প্রযুক্তির কারণে আজকাল অনেক ধরনের ক্যানসার আগেভাগেই ধরা পড়ে। তাই শরীরের প্রতি সচেতন থাকা, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা এবং ঝুঁকি বিবেচনায় স্ক্রিনিং করানো অত্যন্ত জরুরি।বিশেষ করে ৪০ বছর বয়সের বেশি যারা বা যাদের পরিবারের কারো ক্যানসারের ইতিহাস রয়েছে, তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করানো উচিত। সময়মতো সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া গেলে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস