নিজস্ব প্রতিবেদক: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষ, ভোটার, প্রার্থী ও দলগুলোর মাঝে আস্থার পরিবেশ তৈরি করার লক্ষ্যে শিগগিরই মাঠ পর্যায়ে যৌথবাহিনীর অপারেশন পুনরায় চালু হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

তিনি বলেন, ‘আমরা নির্দেশনা দিয়েছি, এখন থেকে মাঠ পর্যায়ে যৌথবাহিনী অপারেশন পুনরায় চালু হবে। যৌথ বাহিনীর অপারেশনের অন্যতম লক্ষ্য হবে অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবার উদ্ধার। সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার এবং আইনের আওতায় নিয়ে আসা। সার্বিকভাবে সাধারণ মানুষ, ভোটার ও প্রার্থী ও দলগুলোর মাঝে একটা আস্থার পরিবেশ তৈরি করা। বিভিন্ন এলাকায় এলাকাভিত্তিক চেকপয়েন্ট অপারেশনের উপর গুরুত্ব দিয়েছি। যেসব এলাকায় অস্ত্রের আনাগোনা আছে মর্মে জানা যায়, ওইসব এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনার ব্যাপারে বলা হয়েছে।’


২১ ডিসেম্বর রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে তিন বাহিনী প্রধানের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বৈঠক এবং পরবর্তীতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনা সংক্রান্ত ইসির সভা শেষে এক ব্রিফিংয়ে নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ এ কথা বলেন।
এরআগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে নির্বাচন ভবনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বেলা ১২টায় তিন বাহিনী প্রধান কমিশনের সাথে বৈঠক করেন। দুপুর আড়াইটায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনা সংক্রান্ত ইসির সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বিভাগ, বাহিনী ও সংস্থা প্রধান ও প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘সার্বিকভাবে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যারা নির্বাচনকে বিঘ্নিত করতে চায়, আন্ডারমাইন করতে চায় এগুলো সব চিহ্নিত করেছি। জনমনে যাতে স্বস্তি ফেরত আসে, মানুষ যেন আশ্বস্ত হয় সে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, যারা নির্বাচনকে বিঘ্নিত করতে চায়, তাদের টার্গেট মূলত শহর এলাকাভিত্তিক। তারা সম্ভবত খুব অর্গানাইজভাবে টার্গেটেড কর্মকাণ্ড করছে। যাতে এটার প্রভাব জনমনে শঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে। এগুলো সব চিহ্নিত করা হয়েছে। জনমনে যাতে স্বস্তি ফেরত আসে, মানুষ যেন আশ্বস্ত হয়, দলগুলো যাতে যথাযথভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করতে পারেন, নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী সব কাজ যেন নির্বিঘ্ন হতে পারে সে নির্দেশনা দিয়েছি।’
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘চোরাগোপ্তা হামলা হল যারা হেরে যায় তাদের একটা কৌশল। এগুলোকে প্রতিহত করার জন্য যা যা করা দরকার তাই করতে হবে। যাতে কেউ এগুলো ঘটানোর দুঃসাহস না দেখায়, তারা যেন পালাতে না পারে সেজন্য আমাদের সচেষ্ট হতে হবে। গোয়েন্দা সংস্থাসহ বাহিনীগুলোকে সচেতন করেছি।’
বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, ‘আইন শৃঙ্খলা বিষয়ে কমিশনের সাথে সকল বাহিনী প্রধানদের এবং সংস্থা প্রধানদের বৈঠক ছিল। আজকে প্রথমবারের মত তিন বাহিনী প্রধান তথা সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান এবং বিমান বাহিনী প্রধানের সাথে আলাদাভাবে মিটিং করেছি। তফসিল ঘোষণা হয়েছে গত ১১ ডিসেম্বর। তফসিল ঘোষণার পরে সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন আমাদের দিক নির্দেশনা এবং অপরাপর আনুষ্ঠানিক কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
তফসিল ঘোষণার পর দ্বিতীয় মিটিংয়ের শুরুতেই শহীদ শরীফ ওসমান হাদিসহ কয়েকজনের রুহের মাগফিতার কামনা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ওসমান হাদির ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত সাত-আট দিন আমরা পুরা জাতি শোকের মধ্যে ছিলাম এবং আমাদের ফোকাসটা সেদিকেই ছিল। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে নির্বাচনী কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’
সুনির্দিষ্টভাবে কতগুলো নির্দেশনা নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ বিকৃত করে এ ধরনের কোন ধরনের কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না। কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যে নির্বাচনের পরিবেশ ক্ষতি করে এই ধরনের কোন কর্মকাণ্ড নিরুৎসাহিত করতে এবং প্রয়োজনে বাধা দিতে যা করা প্রয়োজন তা তারা করবেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available