ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌরসভার চলমান সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ শেষ হওয়ার আগেই চরম অনিয়ম ও নিম্নমানের নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন সড়কের কার্পেটিং কাজ চলমান থাকলেও বিভিন্ন স্থানে হাতের স্পর্শেই পিচ উঠে যাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

সরেজমিনে দেখা যায়, পৌরসভার খোদাদাতপুর এলাকায় সদ্য কার্পেটিং করা সড়কের একাধিক অংশে পিচের স্তর অত্যন্ত দুর্বল। কোথাও পা দিয়ে নড়ালেই পিচ খুলে পড়ছে, আবার কোথাও শিশুরা খেলতে খেলতেই পিচ তুলে ফেলছে। রোলার ও কম্প্যাকশন যথাযথভাবে না হওয়ায় পিচ সঠিকভাবে বসেনি।


স্থানীয়দের অভিযোগ, কাজের শুরু থেকেই এক নম্বর ইটের পরিবর্তে নিম্নমানের তিন নম্বর ইট ব্যবহার করা হয়েছে। অনেক জায়গায় সঠিকভাবে খোয়া না দিয়ে শুধু বালু ভরাট করে নামমাত্র খোয়া ছিটিয়ে দায়সারা কাজ করা হয়েছে। এসব অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ জানানো হলেও প্রতিশ্রুতি ছাড়া কাজের মানে কোনো পরিবর্তন আসেনি। বরং ওই অবস্থাতেই দ্রুত রোলার চালিয়ে কার্পেটিং শুরু করা হয়।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে আইআইডিবি (নগর উন্নয়ন) প্রকল্পের আওতায় পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আংশিক এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মোট ৫ দশমিক ১ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএস রুনা এন্টারপ্রাইজ। চারটি প্যাকেজে বাস্তবায়নযোগ্য এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় চলতি বছরের জুলাই মাসে, যা ২০২৬ সালের জুলাইয়ের মধ্যে শেষ করার সময়সীমা নির্ধারিত রয়েছে। বর্তমানে কাজের অগ্রগতি প্রায় ৪০ শতাংশ বলে ধারণা করা হচ্ছে।
খোদাদাতপুর গ্রামের বাসিন্দা বাবু, সালাম, আজিজ, বুলু, হিরো, কিরন, এজাজ ও ইয়াসিরসহ আরও অনেকে অভিযোগ করে বলেন, ‘মাত্র দুই দিন আগেই সামান্য চাপ পড়তেই রাস্তা থেকে পিচ উঠে গেছে। এমন কার্পেটিং হলে এটাকে রাস্তা বলা যায় না। ছোট বাচ্চা বা মুরগিই যদি পিচ তুলে ফেলে, তাহলে ভারী যান চললে কী হবে?’
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট ম্যানেজার সুনীল প্রথমে কিছু কাজ খারাপ হয়েছে বলে স্বীকার করলেও পরে তা অস্বীকার করেন। পিচ উঠে যাওয়ার দৃশ্য দেখানো হলে তিনি বলেন, ‘৩–৪ দিন সময় না দিলে পিচ উঠবেই।’
অন্যদিকে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএস রুনা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী নজরুল ইসলাম দাবি করেন, তার ৪০ বছরের অভিজ্ঞতার রয়েছে। কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল আল মামুন কাওসার শেখ বলেন, ‘আমি একাধিকবার কাজ পরিদর্শন করেছি। ঠিকাদারকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কাজ খারাপ হলে বিল দেওয়া হবে না। কেন চলমান কাজেই কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available