জেলা মহিলা অধিদপ্তরে চেয়ার ক্রয়ে দ্বিগুণ বিল, নাস্তায় বিরানির ভাউচার
পঞ্চগড় প্রতিনিধি: পঞ্চগড় জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আসবাবপত্র ক্রয় ও বিভিন্ন কর্মসূচির ব্যয় সংক্রান্ত ভাউচারে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দপ্তরের উপ-পরিচালক এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে মাঠ পর্যায়ে অনুসন্ধানে এসব অনিয়মের তথ্য ও প্রমাণ পাওয়া গেছে।জানা যায়, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের কার্যালয়ের জন্য ৫টি চেয়ার ক্রয় করা হয় গত ১১ আগস্ট। তবে বাজারে একই মানের চেয়ার পাওয়া যায় সর্বোচ্চ ২৪ হাজার ৫০০ টাকায়, অথচ দপ্তরের ভাউচারে দেখানো হয়েছে ৫০ হাজার টাকা ব্যয়।এ বিষয়ে অফিসে গিয়ে দেখা যায়, নতুন কেনা চেয়ারগুলো স্থানীয় দোকানে বিক্রিত একই মডেলের। প্রতিটি চেয়ারের বাজারমূল্য গড়ে ৪ হাজার ৯০০ থেকে ৫ হাজার টাকা। অথচ, ভাউচারে প্রতিটি চেয়ারের দাম দেখানো হয়েছে ১০ হাজার টাকার বেশি।এছাড়া চলতি বছরের জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত ‘জাগরণ অনুষ্ঠান’ উপলক্ষে দেওয়া নাস্তার বিলেও অনিয়ম পাওয়া গেছে। অংশগ্রহণকারীদের পরিবেশন করা হয়েছিল একটি সেদ্ধ ডিম, এক প্যাকেট লেক্সাস বিস্কুট ও একটি কলা। অথচ, দপ্তরের ভাউচারে দেখানো হয়েছে ২০০ প্যাকেট বিরানির খরচ।স্থানীয় সূত্র জানায়, এভাবেই উপ-পরিচালক একেএম ওয়াহিদুজ্জামানের নেতৃত্বে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের পঞ্চগড় জেলা অফিস, বোদা উপজেলা, দেবীগঞ্জ উপজেলা ও পঞ্চগড় সদর অফিসে বিভিন্ন ছোট-বড় প্রকল্প ও ক্রয় সংক্রান্ত খাতে অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়ে বছরের পর বছর সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনসহ মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সংশ্লিষ্টরা।সফলতা মহিলা উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি খাদিজা আক্তার বলেন, ‘আমি সে দিন আমার সংস্থা থেকে ২০ জন মহিলা নিয়ে এসেছিলাম প্রোগ্রামে। আমি নাস্তার প্যাকেট পাইনি। আমার সংস্থার মহিলাদের কাছ থেকে শুনেছি, নাস্তার প্যাকেটে একটি কলা, একটি ডিম ও একটি কেক ছিলো। তা ছাড়া আমরা কিছু পাইনি।’জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের হিসাব রক্ষক কাম ক্রেডিট সুপারভাইজার সিলভিয়া নাসরিন বলেন, ‘জুলাই জাগরণ অনুষ্ঠানে নাস্তা হিসেবে ডিম, কলা ও কেক দেওয়া হয়েছিল। জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান স্যার আমাকে যেভা বিল-ভাউচার করতে বলেছেন আমি সেভাবেই করেছি। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। বিল-ভাউচারের বিষয়ে স্যার জানেন।’এ বিষয়ে উপ-পরিচালক এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোনে কল গেলেও রিসিভ হয়নি।স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, ‘সরকারের উন্নয়নমুখী দপ্তরে এভাবে অনিয়ম চলতে থাকলে প্রকৃত উন্নয়ন ব্যাহত হবে এবং জনআস্থা নষ্ট হবে।