শ্রীবরদীতে মাদ্রাসার জমি জালিয়াতির প্রতিবাদে মানববন্ধন
শ্রীবরদী (শেরপুর) প্রতিনিধি: শেরপুরের শ্রীবরদীতে হিলফুল ফুজুল নূরাণী ও হাফেজিয়া মাদ্রাসার জমি জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাতের চেষ্টা এবং মাদ্রাসার কার্যক্রমে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছেন।২২ সেপ্টেম্বর সোমবার সকালে শ্রীবরদী উপজেলার গ্রোবিন্দ্রপুর মাদ্রাসা চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, ২০১৬ সালে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত এ মাদ্রাসার জন্য ২০১৭ সালে মোছা. মনি বেগমের অর্থায়নে স্থানীয় নূর ইসলাম ১২ শতাংশ জমি দান করেন। এ জমি রেজিস্ট্রিকৃত সাফ কবলা দলিল মূলে মাদ্রাসার নামে হস্তান্তর হয়। কিন্তু মাদ্রাসার সাবেক মোহতামিম আলহাজ মো. নূরনবী অসাধু উপায়ে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে জমি আত্মসাতের ষড়যন্ত্র করছেন।বক্তারা জানান, নূরনবী তহশীলদার মো. নূর আলীর সহযোগিতায় অনুমোদিত নামজারি ও জমা খারিজ মোকদ্দমা নং ৭৫৮২ এবং ৭৫৮৩ মূলে মাদ্রাসার জমি নিজের নামে খারিজ খতিয়ান খুলেছেন। এ ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। মাদ্রাসার সদস্য মো. নূর আলম এ বিষয়ে নূরনবীর বিরুদ্ধে শেরপুর আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। পাশাপাশি দাতার উত্তরাধিকারীরাও খারিজ খতিয়ান বাতিলের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে আবেদন করেছেন।মানববন্ধনে বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, মাদ্রাসার স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। জমি সংক্রান্ত মামলার তদন্ত প্রতিবেদন এখনো দাখিল না হওয়ায় সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।এ সময় মাদ্রাসার সভাপতি মো. আসলাম মিয়া বলেন, এটি একটি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অথচ অসাধু প্রভাবশালীরা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। আমরা প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচার চাই।মানববন্ধনে অংশ নিয়ে মো. রঞ্জু মিয়া বলেন, মাদ্রাসার এই জমি এলাকার ধর্মপ্রাণ মানুষের সহযোগিতায় দান করা হয়েছিল। অথচ এখন কিছু লোক জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে এ জমি দখল করতে চাইছে। আমরা এলাকাবাসী তা মেনে নেব না। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি, যেন দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে মাদ্রাসার জমি রক্ষা করা হয়।মানববন্ধনে মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়াও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও অভিভাবকরা অংশগ্রহণ করেন। তারা অবিলম্বে জাল খারিজ খতিয়ান বাতিল করে মাদ্রাসার জমি সুরক্ষিত রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।সিংগাবড়ুনা ও কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. নূর আলী এ বিষয়ে বলেন, আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। কোনোভাবেই জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কারও জমি আত্মসাতের সুযোগ দেওয়া হবে না। তদন্ত সঠিকভাবে সম্পন্ন করে আইনের ভিত্তিতেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মাদ্রাসার জমি নিয়ে যাতে কোনো প্রকার জটিলতা না থাকে, সে বিষয়ে প্রশাসন সর্বদা সতর্ক রয়েছে।ইতোমধ্যে খারিজ বাতিল ও সংশোধনের আবেদন শ্রীবরদী সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে এবং শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে।