• ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ২৮শে কার্তিক ১৪৩২ রাত ০২:৪৯:৩৬ (13-Nov-2025)
  • - ৩৩° সে:
সংবাদ ছবি

শেবাচিমে চালু হয়নি নিউরো ওয়ার্ড, চরম দুর্ভোগে দক্ষিণাঞ্চলের স্ট্রোক রোগীরা

বরিশাল প্রতিনিধি: দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত্তম চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (শেবাচিম)-এ এখনো চালু হয়নি নিউরোমেডিসিন ওয়ার্ড। ফলে স্ট্রোকসহ স্নায়ুজনিত জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।হাসপাতালটিতে প্রতিদিন গড়ে তিন হাজারের বেশি রোগী আউটডোরে চিকিৎসা গ্রহণ করেন, দুই হাজার রোগী ভর্তি থাকেন। কিন্তু হাসপাতালের সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে স্ট্রোক রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড না থাকায় চিকিৎসা ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে।হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক বছরে একাধিকবার নিউরোমেডিসিন ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নিয়েছিল শেবাচিম কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নিউরোমেডিসিন বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. অমিতাভ সরকারের দ্বিমতের কারণে উদ্যোগগুলো বাস্তবায়িত হয়নি।প্রশাসনের অন্তত দুইজন সাবেক পরিচালকও ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নিয়ে ব্যর্থ হন। ফলে স্ট্রোকের রোগীদের এখনও সাধারণ মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হচ্ছে, যেখানে যথাযথ পর্যবেক্ষণ ও বিশেষায়িত চিকিৎসা সুবিধা পাওয়া যায় না।শেবাচিম হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. একে এম নজমুল আহসান বলেন, ‘আগে যেই বাধাই থেকে থাকুক, তা এখন আমাদের বিবেচনায় নেই। বর্তমান পরিচালকের নির্দেশে শিগগিরই নিউরোমেডিসিন ওয়ার্ড চালু করা হবে।’হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে শেবাচিমে তিনজন নিউরোমেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কর্মরত আছেন, তাই জনবল বা সরঞ্জামজনিত কোনো ঘাটতি নেই।স্থানীয় সূত্রে অভিযোগ উঠেছে, ডা. অমিতাভ সরকার নগরীর বাজার রোডে নিজস্ব মালিকানায় কেএমসি হাসপাতাল পরিচালনা করেন এবং অধিকাংশ সময় সেখানে রোগী দেখায় ব্যস্ত থাকেন। এছাড়া তিনি সদর রোডের বেলভিউ ডায়াগনস্টিকেও রাতে চেম্বার করেন।তবে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. অমিতাভ সরকার বলেন, ‘আমি হাসপাতালের অথরিটি নই, ওয়ার্ড চালু করা পরিচালকের দায়িত্ব। ওয়ার্ড চালু হলে আমি দায়িত্ব পালন করব। আমার বাধার কারণে ওয়ার্ড চালু হয়নি— এ তথ্য মিথ্যা।’তিনি আরও বলেন, ‘আমি দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত, এটি সত্য। তবে সরকারি চাকরির পাশাপাশি অনেক চিকিৎসকই প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন। ক্লাস না নেওয়ার অভিযোগও সঠিক নয়।’শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. ফায়জুল বাশার বলেন, ‘ডা. অমিতাভ সরকারের বিরুদ্ধে ক্লাস না নেওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো অফিসিয়াল অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ.কে.এম মশিউল মুনীর বলেন, ‘কেউ বাধা দিচ্ছে কি না, সেটি বিবেচ্য নয়। খুব দ্রুতই নিউরোমেডিসিনসহ আটটি বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করা হবে। প্রয়োজনীয় জনবল ও অবকাঠামো ইতোমধ্যে প্রস্তুত রয়েছে।’নিউরোমেডিসিন ওয়ার্ড চালু না থাকায় স্ট্রোকের মতো জরুরি রোগে আক্রান্ত অনেক রোগী যথাসময়ে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে জটিলতায় পড়ছেন। রোগী ও তাদের স্বজনরা দ্রুত বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালুর দাবি জানিয়েছেন।