হার্ট ও ফুসফুসে জটিলতা, খালেদা জিয়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে
নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হার্ট এবং ফুসফুসে ইনফেকশন ধরা পড়েছে। বর্তমানে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন।২৩ নভেম্বর রোববার রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসনের মেডিকেল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।তিনি বলেন, গত কয়েক মাস ধরেই তিনি খুব ঘন ঘন আক্রান্ত হচ্ছিলেন। আজ আমরা যে কারণে এখানে (এভারকেয়ার) ভর্তি করিয়েছি, ওনার কতগুলো সমস্যা একসঙ্গে দেখা দিয়েছে। ওনার চেস্টে ইনফেকশন হয়েছে।তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, যেহেতু ওনার হার্টের সমস্যা আগে থেকেই ছিল। হার্টে পারমানেন্ট পেসমেকার আছে এবং স্টেন্ট পড়ানো হয়েছিল। তারপরও ওনার মাইট্রোস্টেনোসিস নামে একটি কন্ডিশন আছে। সেজন্য চেস্টে ইনফেকশন হওয়ায় হার্ট এবং ফুসফুস দুটোই একসঙ্গে আক্রান্ত হয়েছে। এজন্য খুব রেসপিরেটরি ডিস্ট্রেস হচ্ছিল। তাই দ্রুত আমরা ওনাকে হাসপাতালে এনেছি।অধ্যাপক সিদ্দিকী বলেন, হাসপাতালে আনার পর তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রাথমিক রিপোর্ট পাওয়ার পর মেডিকেল বোর্ড বসে দ্রুত এন্টিবায়োটিকসহ জরুরি চিকিৎসা দিয়েছে।তিনি জানান, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আরও কিছু রিপোর্ট আসবে। নেক্সট ১২ ঘণ্টার অবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উনি আমাদের সর্বোচ্চ পর্যায়ের ইন্টেন্সিভ মনিটরিং–এর মধ্যে আছেন। বর্তমানে কেবিনেই আছেন। রাত ৮টার দিকে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং তিনি অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে আছেন।খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়ার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের সভাপতিত্বে বোর্ড বৈঠক হয়। বৈঠকে অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী, ডা. জাফর ইকবাল, ডা. জিয়াউল হক, ডা. মামুন আহমেদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাইফুল ইসলাম, লন্ডন থেকে ডা. জুবাইদা রহমান এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিনস হাসপাতালের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।অধ্যাপক সিদ্দিকী বলেন, বোর্ডের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ম্যাডামের চিকিৎসা শুরু হয়েছে।অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান, আমরা যথাযথ চিকিৎসা দিচ্ছি। অত্যন্ত উৎকণ্ঠার কিছু মনে করছি না। আগামী ১২ ঘণ্টা পর বোর্ড আবার বসবে এবং প্রয়োজন হলে চিকিৎসায় পরিবর্তন আনবে।তিনি আরও বলেন, গতকাল ভোর থেকেই লন্ডন থেকে তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণী জুবাইদা রহমান নিয়মিত খোঁজ রাখছেন। আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমানসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যও সব সময় যোগাযোগ রাখছেন।জাহিদ হোসেন জানান, ম্যাডাম দেশবাসীর কাছে সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন-যেমন অতীতেও আপনারা করেছেন।৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরেই আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখসহ নানা জটিল রোগে ভুগছেন। গত ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান তিনি এবং ১১৭ দিন চিকিৎসা শেষে গত ৬ মে দেশে ফেরেন।