বাগেরহাট পশ্চিম প্রতিনিধি: বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় এবার সুপারির বাম্পার ফলন হয়েছে। এবার পর্যাপ্ত বৃষ্টি, রোগ ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় ভালো ফলনের পাশাপাশি আশানুরূপ দামও পাচ্ছে কৃষক। ফলে গতবছরের মন্দার লোকসান ভুলে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।

উপজেলার বাহিরদিয়া, লখপুর, পিলজংগসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলায় ছোট-বড় প্রায় দেড় হাজার সুপারির বাগান রয়েছে। বাগানগুলোতে সুপারির ব্যাপক ফলন হয়েছে। বড় বড় কাধিতে প্রচুর সুপারি ধরেছে।


চাষী শেখ সেলিম, জাহাঙ্গীর হোসেন ও কার্তিক সাহা জানান, এ বছর গাছে গতবারের চেয়ে দ্বিগুণ সুপারি ধরেছে। বেশির ভাগ ফল বড় ও হৃষ্টপুষ্ট হলেও কিছু বাগানে ছোট আকারের চাপিল সুপারি দেখা গেছে।
হাটের দিন ফকিরহাট উপজেলার সুপারির পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, সুপারির ব্যাপক সরবরাহ রয়েছে। গ্রামীণ চাষিরা থলে ও বস্তায় ভরে সুপারি নিয়ে এসেছে। অনেকে ভ্যান ও ট্রলি ভরে সুপারি নিয়ে পাইকারী বাজারে বিক্রির জন্য এসেছেন। পাইকার ও খুচরা ক্রেতারা দরদাম শেষে চাষীদের কাছ থেকে সুপারি কিনে তা আকার অনুযায়ী গ্রেডিং করছেন।
আড়তদার শেখ আনোয়ার হোসেন জানান, পাকা সুপারি তিনটি গ্রেড দেখে তারা ক্রয় করেন। এর মধ্যে প্রতি কুড়ি (স্থানীয় ভাষায় ২২ ঘা বা ২৬৪ পিস) বড় আকারের সুপারি ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা, মাঝারি আকারের সুপারি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা এবং ছোট আকারের সুপারি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা দরে ক্রয় করেন। এছাড়া চাপিল বা চিকন সুপারি ও কাঁচা সুপারি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় কিনে থাকেন। এসব সুপারি কেনার পর তারা রাজধানীসহ রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রেরণ করেন।
আরেক পাইকারি আড়তদার আব্দুল কুদ্দুস জানান, গতবছর সুপারি কম হওয়ায় দাম একটু বেশি ছিল। তবে এবছর প্রচুর ফলন হওয়ায় চাষিরা তুলনামূলক বেশি লাভবান হচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসের দেওয়া তথ্য মতে, ফকিরহাটে চলতি মৌসুমে ২৫০ হেক্টর জমিতে সুপারি চাষ করা হয়েছে। হেক্টর প্রতি ৭ দশমিক ৫০ মেট্রিক টন হিসেবে প্রায় ১ হাজার ৮৭৫ টন মেট্রিক টন সুপারি উৎপাদন হয়েছে। তবে স্থানীয় চাষী ও ব্যবসায়ীদের মতে, প্রকৃত উৎপাদন সরকারি পরিসংখ্যানের চেয়েও বেশি।
ফকিরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত ও রোগ-পোকামাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় এ বছর সুপারির ফলন আশানুরূপ হয়েছে। বাজারেও ভালো দাম পাচ্ছেন চাষীরা।’
তিনি আরও জানান, ‘সঠিক জাতের ব্যবহার বিষয়ে উদ্বুদ্ধকরণ ও উন্নত জাতের চারা প্রাপ্তি নিশ্চিত করাসহ অনাবাদি এবং ছায়াযুক্ত জায়গায় সুপারি চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। অনুকূল জলবায়ু ও মাটির কারণে ফকিরহাটে এ আবাদ আরও সম্প্রসারণের সম্ভাবনা রয়েছে।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available