নিজস্ব প্রতিবেদক: দৈনিক ভোরের কাগজের অনলাইন প্রধান মিজানুর রহমান সোহেলকে মধ্যরাতে তুলে নিয়ে গেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

১৯ নভেম্বর মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে রাজধানীর বাড্ডার নিজ বাসা থেকে ডিবি পরিচয়ে পাঁচ ব্যক্তি তাকে তুলে নিয়ে যায়।


মিজানুর রহমান সোহেল দুই দশকের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা করছেন। দৈনিক ভোরের কাগজের অনলাইন বিভাগের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব নেন ২০২৩ সালে। এর আগে ৭ বছর তিনি দৈনিক যুগান্তরের অনলাইন বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দেশের প্রথম সারির অনলাইন সংবাদমাধ্যম, পত্রিকা ও টেলিভিশনের অনলাইন ও ডিজিটাল বিভাগের প্রধানদের ফ্ল্যাগশিপ সংগঠন ‘অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্স’-এর সাধারণ সম্পাদক হিসাবে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন।
সোহেলের স্ত্রী সুমাইয়া সীমা গণমাধ্যমকে জানান, ওই পাঁচজনের একজন নিজেকে আশরাফুল পরিচয় দিয়ে বলেন, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান সোহেলের সঙ্গে কথা বলতে চান। এজন্য তাকে নিতে এসেছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার তাকে ফিরিয়ে দিয়ে যাওয়া হবে।
সীমা বলেন, তিনি শুয়ে পড়েছিলেন, সোহেল তখনো ল্যাপটপে কাজ করছিলেন। এসময় কলিংবেলের শব্দ পেয়ে সোহেল গিয়ে দরজা খুলে দেখেন ডিবির জ্যাকেট গায়ে পাঁচজন দরজায় দাঁড়িয়ে আছেন। পরে পাশের রুম থেকে তিনি এসে জানতে চান তারা কী জন্য এসেছেন। তখন ওই কর্মকর্তা সোহেলকে নিতে আসার কারণ তুলে ধরেন।
আমি খুবই চিন্তায় পড়েছি। রাত বাজে আড়াইটা এখনো ওরা দিয়ে যায়নি। আমি অসুস্থ, আমার বাচ্চাও অসুস্থ।
ঘটনার সত্যতা জানতে গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে ডিবি প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, তাকে এখানেই আনা হয়েছে। কেন রাত ১২টার পর একজন গণমাধ্যমকর্মীকে বাসা থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে মিজানুর রহমান সোহেলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয় আনা হয়েছে।
এদিকে প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের তার ফেসবুকে পোস্টে দাবি করেছেন, সোহেলকে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে তার সঙ্গে ঢাকা মহানগর ডিবির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওই কর্মকর্তা ডিবি কার্যালয়ে সোহেলকে নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন বলে সায়েরের পোস্টের ভাষ্য।
কী কারণে ওই সাংবাদিককে মাঝরাতে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেই বিষয়েও সায়ের ইঙ্গিত দিয়েছেন পোস্টে।
তিনি লেখেন, বিশেষ একটি সিন্ডিকেটের প্ররোচনায় সাধারণ স্মার্টফোন বিক্রয়কারীদের সাথে কোনরূপ আলোচনা না করে, তাদের ব্যবসা হারানোর আশঙ্কাকে আমলে না নিয়ে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন রেজিস্টার (এনইআইআর) শুরু করতে যাচ্ছিল নেদারল্যান্ডসের নাগরিক এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়ব।
সাধারণ ব্যবসায়ীরা তাদের দাবি দাওয়াতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ এবং জনমত গঠনে বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজনে একজন গণমাধ্যম কর্মী হিসেবে পরামর্শ দিচ্ছিলেন মিজানুর রহমান সোহেল। এই সংবাদ সম্মেলন বানচাল করতে এবং ব্যবসায়ীদের ভয় দেখাতে ফয়েজ তৈয়বের ইশারায় এমনটা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন আয়োজকরা।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available